Posted on Aug 18, 2024 12:14:16 PM.
জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নিহতদের শহীদ হিসেবে অভিহিত করে তাঁদের পরিবার এবং আহত ও পঙ্গু হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের বিভিন্নভাবে সহায়তা পরিকল্পনা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। পরিকল্পনা অনুযায়ী, নিহতদের পরিবারের সদস্যদের যোগ্যতা অনুযায়ী সরকারি চাকরি বা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। আর আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা, পুনর্বাসন, কর্মসংস্থান, আর্থিক ও মানবিক সহায়তা বা অন্য কোনো উপযুক্ত সুবিধা দেওয়া হবে। ফাউন্ডেশনের কার্যাবলি উল্লেখ করে খসড়ায় বলা হয়, জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের কল্যাণে তাঁদের পরিবারকে আর্থিক ও মানবিক সহায়তা দেবে ফাউন্ডেশন। পাশাপাশি তাঁদের পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থান বা অন্য কোনো উপযুক্ত সুবিধা দেওয়া হবে। আন্দোলনে আহত বা পঙ্গুত্ববরণকারী ব্যক্তিদের ওষুধপত্র প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি কর্মসংস্থান, আর্থিক ও মানবিক সহায়তা বা অন্য কোনো উপযুক্ত সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করা এই ফাউন্ডেশনের কাজ। এ ছাড়া আহত বা পঙ্গুত্ববরণকারী ব্যক্তিদের পুনর্বাসন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ও প্রশিক্ষণের পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের জন্য শিক্ষা বৃত্তিও দেব ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনের তহবিল প্রসঙ্গে খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, ফাউন্ডেশনের একটি তহবিল থাকবে। এতে সরকার অনুদান বা মঞ্জুরি দিতে পারবে। সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে কোনো বিদেশি সরকার, আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থা, এজেন্সি, সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান হতেও অনুদান ও ফাউন্ডেশন কর্তৃক গৃহীত ঋণ নেওয়া যাবে। এ ছাড়া ফাউন্ডেশনের সম্পত্তি বা যেকোনো কার্যক্রম হতে লব্ধ আয় ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা অনুরূপ কোনো সংস্থা, কোনো ব্যক্তি, সমিতি বা প্রতিষ্ঠানের অনুদান নেওয়া যাবে। এমনকি তহবিলের অর্থ বিনিয়োগে অর্জিত মুনাফা; ফাউন্ডেশনের নিজস্ব উৎস হইতে প্রাপ্ত আয় এবং অনুমোদিত অন্য কোনো বৈধ উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ তহবিলে গ্রহণ করা যাবে। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হয় এই আন্দোলন। পরে তা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত জুলাই ও আগস্ট মাসে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডকে ‘জুলাই গণহত্যা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। আর এই সময়ে অন্তত ৬৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। তবে ছাত্র আন্দোলনে এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেছেন সদ্য সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও বর্তমানে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। যদিও নির্দিষ্ট কোনো তালিকা করা না হলেও সংঘাতে মৃতের সংখ্যা অন্তত এক থেকে দেড় হাজার হতে পারে বলে মনে করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ সংখ্যার কথা জানান।
এমন সব ব্যবস্থা রেখে ‘জুলাই গণহত্যা স্মৃতি ফাউন্ডেশন অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়া চূড়ান্ত করেছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। অনুমোদনের জন্য অধ্যাদেশটি উপদেষ্টা পরিষদের আগামী বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে। পরিষদের সম্মতি সাপেক্ষে শিগগির তা অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।