হিট র্যাশ, চলতি ভাষায় যাকে আমরা ঘামাচি বলি, তা হলো ত্বকের এমন একটি অবস্থা যার ফলে ত্বকে চুলকানি হয় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে লাল ছোপ দেখা দেয়। সাধারণত বছরের যে মাসগুলোতে প্রচণ্ড গরম থাকে এবং শরীরে স্বাভাবিকের থেকে বেশি ঘাম হয়, সে সময় ঘামাচি হয়। ত্বকের এ সমস্যা খুব অস্বস্তিকর।
* লক্ষণ ও উপসর্গ
ঘামাচির প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলো শরীরে পরিষ্কারভাবে ফুটে ওঠে এবং তা সহজেই চেনা যায়। এরমধ্যে রয়েছে- ত্বকের উপর লাল ছোপ ফুটে ওঠা, খুব ছোটো ছোটো ফোস্কার মতো ওঠ, ত্বকে প্রচণ্ড চুলকানি হওয়া, গায়ের জামা কাপড় চামড়ার সঙ্গে ঘষা লাগলে খুব অস্বস্তিবোধ হওয়া ও ত্বক রুক্ষ হয়ে ওঠা এবং খসখসে হওয়া। এ উপসর্গগুলো সাধারণত ঘাড়-গলা, কাঁধ, বুক এবং পিঠে দেখা যায়। কিছু ক্ষেত্রে ঘামাচি কনুইয়ের ভাঁজে এবং কুঁচকিতেও হয়।
* কারণ
শরীর যখন তাপের সরাসরি সংস্পর্শে আসে, তখন প্রচুর ঘাম বের হয়। অত্যধিক তাপ এবং আর্দ্রতার কারণে লোমকূপ বন্ধ হয়ে গেলে ত্বকে প্রদাহ দেখা দেয়। আর তার ফলে চামড়া চুলকাতে শুরু করে এবং ছোটছোট ফুসকুড়ি ওঠে এবং আক্রান্ত জায়গা লাল হয়ে যায়।
* রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা
ঘামাচির উপসর্গ কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকে এবং সাধারণত কোনো রকম চিকিৎসা ছাড়াই ত্বক থেকে নির্মূল হয়ে যায়। ঘামাচির সমস্যা যেহেতু বেশ অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে অনেক ক্ষেত্রেই, তাই ঘামচির সমস্যাকে প্রতিরোধ করতে ও ত্বককে প্রশমিত করতে কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।
* প্রতিরোধক ব্যবস্থা
▶ ত্বক বা চামড়ায় যাতে ঠিকমতো বাতাস লাগে, তার জন্য ঢিলেঢালা পোশাক পরুন।
▶ ঠান্ডা এবং শুকনো পরিবেশে থাকুন।
▶ শারীরিক কসরৎ বা ব্যায়ামের পরেই গোসল করে নিন।
▶ ত্বকের জ্বালাভাব আটকাতে নরম জামা-কাপড় পড়ুন।
▶ ঘরোয়া পদ্ধতিতে প্রতিকার নেওয়া যেতে পারে যেমন, ঠান্ডা অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের পাশাপাশি ঘামাচি হওয়া জায়গাটা ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে চুলকানি থেকে উপশম পাওয়া যায়।
▶ লোমকূপে যদি সংক্রমণ হয়, সেক্ষেত্রে আলাদা করে চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।
▶ ঘামাচিরোধক পাউডার ও চুলকানির জন্য ওষুধ ব্যবহার করা যায়।
লেখক : ত্বক ও যৌন ব্যাধি বিশেষজ্ঞ, বিভাগীয় প্রধান (প্রাক্তন), ত্বক ও যৌন ব্যাধি বিভাগ,
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল।